নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) দ্বিতীয় দিনে টোল আদায়ের চাপ অনেকটাই কমেছে। শনিবার (২ জুলাই) সকালে আগের দিন থেকে গাড়ির চাপ কম থাকায় এবং যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে টোল আদায়ের গতি বাড়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।
সরেজমিনে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভার বগাইল টোল প্লাজা ফাঁকা দেখা গেছে। গতকাল শুক্রবার (১ জুলাই) যেখানে তিন থেকে চার কিলোমিটার দীর্ঘ বাসের সারি ছিল। এখন খুব সময়ে টোল পরিশোধ করে গাড়িগুলি সাঁই সাঁই করে রওনা দিচ্ছে।
গতকাল ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজা এলাকায় চার কিলোমিটার যানজট তৈরি হয়। এর কারণ হিসেবে ছিল টোল আদায়ে ধীরগতি। ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজার ১০টি টোল বুথের মধ্যে সচল ছিল চারটি। এ কারণে যাববাহনের সারি পড়ে যায়।
পরে বেলা ১১টার দিকে আরও তিনটি চালু করে সাতটি টোল বুথ করা হয়েছে। এতে টোল আদায়ের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার আরও একটি চালু করে এখন মোট আটটি বুথে টোল আদায় হচ্ছে। এতে যানজট দূর হয়েছে। আজ দুপুর পর্যন্ত সড়কে স্বাভাবিক চিত্র দেখা গেছে।
ফরিদপুর শহর থেকে ঢাকার উদ্দেশে শনিবার ভোরে ছেড়ে যাওয়া গোল্ডেন লাইন পরিবহনের এক বাসচালক জানান, আজ সকাল সাড়ে ৫টায় ফরিদপুর শহরের ভাঙ্গার রাস্তার মোড় থেকে বাস নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়ে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে ঢাকার কদমতলী পৌঁছান। আবার সকাল সোয়া ৮টায় বাস নিয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়ে পদ্মা সেতু পার হয়ে সকাল ১০টায় মধ্যে ফরিদপুর পৌর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান। টোল আদায় দ্রুত হওয়ায় এ স্বস্তি পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
বরিশাল থেকে মাইক্রো নিয়ে ঢাকা যাচ্ছেন হক সাহেব (৪৪)। তিনি জানান, টোল দিতে খুবই সময় সময় লেগেছে। এক মিনিটেরও কম। টোল প্লাজায় কোনো যানজট নেই, ভিড় নেই। টোল নিতে দ্রুতগতি রাখতে পারলে সবার উপকার হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
টোল আদায়ে নিয়োজিত কর্মী এম ডি ইব্রাহিম বলেন, বগাইল টোল প্লাজায় আসা-যাওয়া মিলে মোট ১০টি কাউন্টার। এর মধ্যে শনিবার পর্যন্ত চারটি করে মোট আটটি টোল বুথ চালু হয়েছে। তিনি বলেন, বাকি দুটির কারিগরি কাজ চলছে। আশা করছি আগামীকাল রোববার (৩ জুলাই) ওই দুটি বুথও চালু করা সম্ভব হবে। সব বুথ চালু হলে ঈদে যানজট হবে না।
টোল প্লাজার প্রশাসনিক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হোসেন জাকারিয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ লাখ চার হাজার ৬৪০ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসন্ন উদুল আজহা উপলক্ষে এ পথে গাড়ির চাপ বাড়বে। সে প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। ১০টি টোল বুথ চালু হলে আমাদের এখানে সমস্যা হওয়ার কথা না।
প্রসঙ্গত, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গাগামী ৫৫ কিলোমিটার এই এক্সপ্রেসওয়ের নাম দেওয়া হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ে। পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার। অপরদিকে পদ্মা সেতু থেকে ঢাকার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার।
এর মধ্যে ভাঙ্গা অংশে পড়া এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায় করা হয় ভাঙ্গা গোলচত্বরের অদূরে ভাঙ্গা পৌরসভার বগাইল নামক স্থানে। ওই যায়গায় আসা-যাওয়ার ১০টি লেনে ২৩ কিলোমিটার অংশের টোল নেওয়া হচ্ছে।
এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশটুকু পার হতে একটি বড় বাসকে দিতে হবে ২০০ টাকা, মিনিবাস ১১০, মাইক্রোবাস ৯০, প্রাইভেট কার ৫৫ ও মোটরবাইক ১০ টাকা। এ ছাড়া বড় ট্রাক ৬৭৫, ভারী ট্রাক ৪৪০ ও মাঝারি আকারের ট্রাক ২২০ টাকা।