নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদুল আজহার দিনও বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন অনেকেই। গাবতলী টার্মিনাল থেকে দেশের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে বাস। সড়কে যানজট না থাকায় অনেকটা ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি যাওয়ার কথা বলছেন যাত্রীরা। তবে আছে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ।রোববার (১০ জুলাই) গাবতলী টার্মিনাল ঘুরে এ চিত্রই দেখা গেছে। কেউ দেরি করে ছুটি পেয়েছেন, কেউ আবার কুরবানির কাজ ও পশুর মাংস সংগ্রহ করেছেন।
কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কুরবানির ঈদে সাধারণত সকালে আর বিকেলের পর যাত্রীর চাপ বেশি থাকে। যারা ছুটি দেরি করে পান তারা সকালেই রওনা দেন। আর যারা পশু কুরবানির কাজে জড়িত ও মাংস সংগ্রহ করেন তারা বিকেল ও রাতে বাড়ির উদ্দেশ্যে ছুটেন।দর্শনা বিলাস পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শরিফ উদ্দিন শিল্টু বলেন, সকাল ১০টার বাসে যাত্রীতে পূর্ণ ছিল। আজ রাত ৯টা ও ১০টায় চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এমন দুটো বাস আছে। সেগুলোর ৫-৬টা সিট ফাঁকা আছে। বিকেলের মধ্যেই সেগুলো পূরণ হবে।
তিনি বলেন, যারা দেরি করে ছুটি পেয়েছেন মূলত তারাই আজকে বাড়ি যাচ্ছেন।
ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার রুবেল আনোয়ার জানান, সকালে তাদের বাস ফুল গেলেও বিকেলের বাসে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া এবার পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ঈদের দিন গাবতলীতে যাত্রী কম।পরিবহন শ্রমিক মামুন ও জারিফুল কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে লোকাল বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন গাবতলীর প্রধান সড়কে।মামুন বলেন, গতকাল রাত পর্যন্ত গাড়ি চালাইছি। আজকে ছুটি পাইছি। কাউন্টার থেকে বলছে এখন বাস নাই। আবার ভাড়াও বেশি। তাই লোকাল বাসের জন্য অপেক্ষা করছি।প্রবাসী শ্রমিক বাদল শেখ যাবেন খুলনার ফুলতলা। অপেক্ষা করছিলেন একটি বাস কাউন্টারে। তিনি বলেন, ঢাকায় আমার ফ্যামিলি থাকে। দুই বছর পর পর আমি আসি। কোনো বার ঈদের সময়ও আসা হয়। যখন কোম্পানি ছুটি দেয় তখনই আসি। আজকে সকালের ফ্লাইটে দুবাই থেকে এসেছি। এখন স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।বিগত কয়েকদিন বাসের শিডিউল বিপর্যয় থাকলেও এদিন নির্ধারিত সময়ে ছেড়েছে ৷ গাবতলী আসতে বকশিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়েছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন তারা।
মসজিদের ইমাম মো. নুরুল আমিন বলেন, ঈদের নামাজ পড়িয়ে এখন বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে গাবতলী এসেছি। কিন্তু মানিকগঞ্জ থেকে গাবতলীতে আসতে দ্বিগুনের বেশি ভাড়া দিতে হয়েছে। সবাই ঈদ বকশিসের নামে দ্বিগুন ভাড়া চাইছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।ওমান থেকে তিনটি ব্যাগ নিয়ে এসে বিপদে পড়েছেন প্রবাসী সেলিম শেখ। টার্মিনাল খাজনা, কুলিবাবদ টাকাসহ তার কাছ থেকে ৫০০ টাকা চাওয়া হয়। তিনি বলেন, কল্যাণপুর কাউন্টার থেকে যশোরের ভাড়া ৭০০ টাকা চাওয়া হয়েছে। প্রথমে দুপুরে বাসের কথা বলা হলেও এখন বলছে বাস আসবে সন্ধ্যায়। আর গাবতলী বাস কাউন্টারে শুধু মালের ভাড়াই ৭০০ টাকা চাচ্ছে ৷তিনি আরও বলেন, ঈদের দিন বেশি ভাড়া চাইবে ঠিক আছে। ১০০ টাকার ভাড়ার ২০০ টাকা চাইবে। কিন্তু এখন তো দেখি ডাবলের বেশি ভাড়া সব জায়গায়।