শনিবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

তাড়াইলের বেশিরভাগ এলাকা বন্যায় প্লাবিত জনমনে আতংক

ওয়াসিম উদ্দিন সোহাগ তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ)
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা বেশিরভাগ অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত। মানুষের জানমাল,গবাধিপশু নিয়ে চরম বিপাকে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি গ্রামই কমবেশি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বিষেষ করে ৩নং ধলা ইউনিয়ন, ৪নং জাওয়ার, ৫নং দামিহা ৬নং দিগদাইড় ও ৭নং তাড়াইল সাচাইল ইউনিয়ন এই পাঁচটি ইউনিয়ন তুলনামুলক বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
অঝরধারা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তলিয়ে গেছে উক্ত এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসা ও হাটবাজার। ফলে অঘোষিত ভাবেই বন্ধ হয়ে গেছে উক্ত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সাধারণ জনগণ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। কৃষকেরা তাদের গবাদিপশু নিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে আছে। সাধারণ মানুষের দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট ও বিশুদ্ধ পানির অভাব। চারদিকে মানুষের মনে এক অজানা সংশয় বিরাজ করছে। খাদ্যভাব অসুখ, বিসুখ আর ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
এ দিকে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত একমাত্র হাসপাতাল তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্লাবিত হওয়ায় জরুরি স্বাস্থ্য সেবা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। রোগীরা স্বাভাবিক ভাবে হাসপাতালে যেতে পারছেনা। এ বিষয়ে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ ফিরোজ মিঞা বলেন,হাসপাতালের চারদিকে পানি থাকায় কোয়ার্টার থেকে ডাক্তার নার্সদের আসতে সাময়িক সমস্যা হলেও রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের সকলের সদিচ্ছায় তা মোকাবিলা করে যাচ্ছি। কারো যাতে কোন রকম চিকিৎসা সেবা নিতে ত্রুটি না হয়। সে দিকে আমরা বিশেষ খেয়াল রাখছি।
চাহিদার তুলনায় সহায়তা কম থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের নানান অভিযোগ রয়েছে। কেউ কেউ এখনো কোন রকম সহযোগিতা পায়নি। এ ব্যাপারে পিআইও এসএম আবু মোতালেব বলেন, উপজেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুমের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা শারমিন ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ৩০ টি প্যাকেট বিতরণ করেন। প্রতিটি প্যাকেটে রয়েছে ১০ কেজি চাল, ১ লিটার তেল, ১ কেজি মুশুর ডাল, লবণ, হলুদ,মরিচ ধনিয়া ইত্যাদি। সামাজিক গণমাধ্যমে প্রচারিত কন্ট্রোল রুমের নাম্বারে এ পর্যন্ত ফোন করে কেউ সাহায্য নিয়েছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে, তিনি বলেন ফোন করে কেউ সাহায্য নেয়নি। তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দেয়ার সব রকমের ব্যবস্থা করছি। বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ৪ টি ইউনিয়ন ধলা,জাওয়ার,দামিহা ও দিগদাইড়ে ১০ মেট্রিকটন চাল বিতরণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ২০০ প্যাকেট ত্রানের মধ্যে ১২০ প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। আরো ৩০ মেট্রিকটন চালের চাহিদা দেওয়া আছে। সেগুলি যদি আসে প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তা বাস্তবায়ন করবে।
বন্যা পরিস্থিতির সমস্যা মোকাবেলা বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম শাহীন বলেন, আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। গতকাল উপজেলার ১১ টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবার ও প্যাকেট পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটের ওজন ১৪ কেজি ৪০০ গ্রাম। এর মধ্যে শুকনো খাবার সহ চাল,ডাল,তেল,লবণ মশলাপাতি ইত্যাদি রয়েছে। যা স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিতরণ করার নির্দেশ দেয়া আছে।
আজ তাড়াইল করিমগঞ্জের রুপকার, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি মহোদ্বয়ের সাথে বন্যার্তদের সাথে দুঃখের ভাগিদার হতে যাচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ