মঙ্গলবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

৩০ হাজার টাকায় মিলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নাগরিক নিরাপত্বার একটি গুরুত্বর্পূন বিষয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি জনবান্ধব নাগরিক সেবা হচ্ছে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট। সম্প্রতি রাজধানীর পল্টন মডেল থানা এলাকার বেশকিছু পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের আবেদন পত্র জমা পড়ে। আবেদন পত্রে উল্লেক্ষিত ঠিকানা দেখে সন্দেহ হয় পুলিশ কর্মকর্তাদের। ঠিকানা যাচাইবাছাই ও পর্যালোচনার এক পর্যায়ে উঠে আসে ভয়ংকর তথ্য।

বিভিন্ন মামলায় জড়িত ব্যক্তিদেরকে এক শ্রেনীর অসাধু চক্র টাকার বিনিময়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাইয়ে দেয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। চক্রের সন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ। গতকাল ৩১শে মে পল্টন থানা পুলিশের একটি টিম রাজধানীর ফার্মগেট, খিলক্ষেত ও ঢাকা জেলার কেরানীগন্জ থেকে চক্রের তিন(৩) সদস্য‘কে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. মাসুদ মিয়া (৪৮), মো. কামাল হোসেন (৪৮) ও মো. গোলাম কিবরিয়া (৫৩।

পল্টন মডেল থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আঃ আহাদ । তিনি বলেন, গত ২০শে এপ্রিল গ্রেফতারকৃত মো. মাসুদ মিয়া পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি, ঢাকা বরাবর অনলাইনে একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের সাথে সংযুক্ত অনলাইন ডকুমেন্ট গুলো সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে গোপনে তদন্তের কাজ চালায় তদন্ত কর্মকর্তারা। আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলেরের প্রত্যয়ন পত্রটি যাচাই করতে গেলে প্রত্যয়ন পত্রটির স্বাক্ষর ও প্রত্যয়ন পত্রটি সঠিক নয় মর্মে ওয়ার্ড কাউন্সিলর লিখিতভাবে থানাকে অবহিত করেন।

ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন,তদন্তে উঠে এসেছে গ্রেফতারকৃত আাসামি মাসুদ মিয়ার নামে নরসিংদী জেলার মাধবদী থানায় একাধিক মামলা থাকায় সে বিদেশ গমনের সুবির্ধাথে পল্টন মডেল থানা এলাকার একটি ঠিকানা ব্যবহার করে পল্টন মডেল থানা থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহের জন্য অপর আসামী কামাল হোসেন কে ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে পাসপোর্ট প্রদান করে। আসামি মো. কামাল হোসেন ২৮ হাজার টাকা চুক্তিতে আসামি মো. গোলাম কিবরিয়া কে মাসুদ মিয়ার পাসপোর্ট প্রদান করে। তারা পরস্পর যোগসাজশে মূল পাসপোর্টের তথ্য পাতা স্ক্যান করে জরুরি যোগাযোগের ঠিকানা কম্পিউটারের মাধ্যমে এডিট করে পল্টন মডেল থানার একটি ঠিকানা ব্যবহার করে ভূয়া পাতা তৈরি করে এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করে। পাসপোর্ট ধারীর ঠিকানা পরিবর্তন ও এডিটকৃত পাসপোর্টের ফটোকপিতে জাল সিলমোহর ও জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে সত্যায়নকারী হিসেবে একজন ডাক্তারের সিল ও স্বাক্ষর ভুয়া তৈরি করে সত্যায়নপূর্বক পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করে।

ডিসি আহাদ আরও জানান আসামিরা দীর্ঘদিন যাবৎ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সনদপত্র, জাল সিলমোহর তৈরি করে পাসপোর্টধারীর ঠিকানা পরিবর্তন করত। এডিটকৃত পাসপোর্টের ফটোকপিতে জাল সিলমোহর ও স্বাক্ষর করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করে আসছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত কামাল পুলিশকে বেশ গুরুত্বপুর্ন তথ্য প্রদান করেছে। এই চক্রের মূলহোতা সুমন এখনো পলাতক রয়েছে। সুমনকে গ্রেফতারের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি আহাদ জানান তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।খুব দ্রুতই আমরা আপনাদের ভালো খবর দিতে পারব। আজ তাদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে পল্টন মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় রিমান্ডে এনে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ