সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কৃষকদের জন্য আর্থিক সহায়তা তহবিল সময়ের দাবি

হটাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপন্যের বাজারে মূল্যেরও ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। বেড়েছে যোগাযোগের মাধ্যম যানবাহনের ভাড়া। এ নিয়ে চার দিকে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে কিন্তু এর ফলে কৃষিক্ষেত্রে যে বিরাট প্রভাব পড়েছে, তা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। যদিও একক খাত হিসেবে কৃষিতে এর প্রভাব খুব বেশি পড়বে। আমরা ভুলে গেছি কৃষি ও রপ্তানি খাতই করোনা-কালীন আমাদের অর্থনীতি সচল রেখেছে। আমনের এ ভরা মৌসুমে খরচ মেটাতে কৃষক হিমসিম খাচ্ছেন। এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আমন ধানে সেচ বেশি দিতে হচ্ছে। উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে খরচের টাকা উঠবে কিনা, তা নিয়ে কৃষক চিন্তিত।

সম্প্রতি এক গবেষণা সংস্থার সংলাপে বলা হয়েছে, ৬০ শতাংশ চাল আসে বোরো থেকে। যা পুরোটাই সেচ নির্ভর। ৩৭ হাজার গভীর নলকূপ, ১৩ লাখ অগভীর নলকূপ থেকে সেচ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ১৫ লাখ কৃষি যন্ত্রপাতি আছে, যার ৭৫ শতাংশ ডিজেল চালিত। ডিজেলের দাম বাড়ায় বিঘা প্রতি সেচের খরচ বাড়বে ৭০০ টাকা। পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর ব্যবহারে খরচ বাড়বে ৩০০ টাকা। এদিকে উইরিয়া সারের দামও বেড়েছে। এ দাম বাড়ার কারণে খরচ বাড়বে ৫০০ টাকা। প্রতিবছর আমন চাষের সময় বৃষ্টিপাত থাকলেও এবার বৃষ্টিপাত হয়েছে কম। তাই কৃষকের আমন চাষের জন্য পুরোটাই সেচের উপর নির্ভর করতে হবে।

অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষিপণ্য পরিবহনের খরচও বেড়েছে। ফলে উৎপাদিত কৃষি পণ্যেও উৎপাদন খরচে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাই কৃষকরা কৃষিতে মনোযোগ হারাচ্ছেন। কৃষি প্রধান দেশের কৃষক যদি কৃষি কাজে মনোযোগ হারায়, তবে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। এমনিতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈষয়িক খাদ্য সংকট দেশে দেশে দেখা যাচ্ছে। তাই কৃষককে কৃষিতে উৎসাহিত করতে এবং উৎপাদন ব্যয় কমাতে সরকারকে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারটি ভাবতে হবে। করোনা কালে শিল্প কারখানা মালিকদের আর্থিক সহায়তার বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছিল। তবে কৃষি সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সহায়তা তহবিল কেন করা যাবে না?তাই সারা দেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মীদের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষক চিহ্নিত করে তাদের নুন্যতম মূল্যে সার ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা জরুরি। আর তা যত দ্রুত সম্ভব ততোই মঙ্গল।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ