সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের রাজনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন কলেজপড়ুয়া এক তরুণী। গতকাল সোমবার বিকেল ৫টা থেকে উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের খারপাড়া এলাকার তানিম শেখের বাড়িতে অবস্থান নেন ওই তরুণী। স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন বাবলু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তানিম শেখ উপজেলার ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মাসুক শেখের ছেলে। অনশনে বসা ওই তরুণী মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের সাবিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ওই কলেজ ছাত্রী জানান, চার মাস ধরে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের ফাঁদে ফেলে তানিম শেখ তাঁর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন। চলতি বছরের জুনের ১ তারিখ তানিম শেখ তাঁকে বিয়ের কথা বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে যান এবং উপজেলার মেহেরুন নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সারা রাত রেখে ভোর ৬টায় বেরিয়ে যান। পরে দেখা করতে এলে স্থানীয়রা তাঁকে আটক করে সালিসের ব্যবস্থা করেন। স্থানীয় সালিসে তানিম শেখ প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান।

জানা গেছে, তানিম শেখের বাবা গত ৯ জুন বিয়ের তারিখ ধার্য করার শর্ত দিয়ে মুচলেকা দেন। সালিসের দু’দিন পর তানিমের বাবা বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর তানিম শেখ, তাঁর বাবা ও ভাইকে আসামি করে মামলা করেন। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন। তানিম বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দেন ওই কলেজপড়ুয়া তরুণী।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তানিম শেখ মোবাইল ফোনে জানান, ওই তরুণীর সঙ্গে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না তার। বন্ধুর পারিবারিক বিষয় মীমাংসা করতে গিয়ে তরুণীর সঙ্গে পরিচয় ঘটে। মেয়েটি অন্যত্র পালিয়ে যেতে তার সহযোগিতা চান। সেই সহযোগিতা করার সুবাধে রাজনগর মেহেরুনেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যান তিনি। পরে দেখা করার কথা বলে তাকে আটক করে জবানবন্দি নেওয়া হয়।

তানিম শেখের মাও ছেলের সাথে সুর মিলিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক হয়নি।’ এবিষয়ে রাজনগর সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন বাবলুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি মেয়েটি অবস্থান করছে। বিষয়টি নিয়ে পরিবার এবং থানা-পুলিশের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’

এ বিষয়ে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভূষণ রায়ের সাথে রাত দশটার দিকে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘ওই কলেজছাত্রী আদালতে একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন। মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে এবং রাজনগর থানায় ছেলের বাবার নামে বিয়ের শর্ত ভাঙার একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মামলা নিয়েছি। অনশন জনগণের জন্য বিরক্তিকর বিষয়। কিছু ঘটলে আমরা আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ